বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও মানবাধিকার বিভাগে গত ০৪ আগস্ট, ২০২১, দুপুর ৩ টায় “Cyber Laws of Bangladesh: Investigation and Trial Procedure.” ভার্চুয়াল সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেমিনারের মূল বক্তা হিসেবে ছিলেন মোঃ জিয়াউর রহমান, বিচারক, সাইবার ট্রাইব্যুনাল, রাজশাহী। সভাপতি ছিলেন আইন ও মানবাধিকার বিভাগের মাননীয় কো-অর্ডিনেটর প্রফেসর আবু নাসের মোঃ ওয়াহিদ।
মোঃ জিয়াউর রহমান বলেন, সাইবার ট্রাইব্যুনালের আপিল ফোরাম তিনজন ব্যক্তির সমন্বয়ে গঠিত হয় যথা: সুপ্রিম কোর্টের একজন বিচারপতি, একজন জুডিশিয়াল অফিসার (জেলা জজ), একজন আইটি এক্সপার্ট। তিনি বলেন, কোন ব্যক্তি অনুমতি ছাড়া অপর কোন ব্যক্তির কম্পিউটারে প্রবেশ করলে তা এই আইনের অধীনে অপরাধ বলে গণ্য হবে। তার মতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, ২০১৮ এর অধীনে প্রতি ১০ টি মামলার মধ্যে ৯ টি মামলা হয় এই আইনের ২৫ ধারায়, যার জন্য তিন বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড বা তিন লক্ষ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড হতে পারে। কারো জন্য মানহানিকর হয় এমন কোনো বক্তব্য ডিজিটাল মাধ্যমে প্রকাশিত হলে সেটাও এ আইনের অধীনে শাস্তিযোগ্য হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। এছাড়াও কেউ যদি ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার করে সরকারি গোপনীয়তা ভঙ্গ করেন তবে তিনি এ আইনের অধীনে শাস্তি পাবেন। এই আইনের ১৮ নম্বর ধারায় আপস-মীমাংসার কথা বলা হয়েছে যা অন্য কোন ধারায় স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা নেই বলে তিনি মন্তব্য করেন।
তার মতে, এই আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে যারা জড়িত যেমন বিচারক, আইনজীবী, তদন্তকারী কর্মকর্তা কেউ যথাযথ দক্ষতা অর্জন করতে পারেননি এখন পর্যন্ত, এ বিষয়ে অনেক বেশি ট্রেনিং প্রয়োজন। তাছাড়া এখন পর্যন্ত আটটি বিভাগীয় শহরে মোট আটটি সাইবার ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়েছে যে কারণে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের ভুক্তভোগীরা এই আইনের সুবিধা গ্রহণের ক্ষেত্রে অনেকটাই পিছিয়ে রয়েছে। সবশেষে তিনি উল্লেখ করেন যে, সময়ের চাহিদা মেটাতে গিয়ে নতুন একটি আইন এসেছে তাই এই আইনের দুর্বলতার চাইতে ভালো দিকই বেশি।
সভাপতি মাননীয় কো-অর্ডিনেটর প্রফেসর আবু নাসের মোঃ ওয়াহিদ বলেছেন, এই ওয়েবিনারের গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা থেকে শিক্ষার্থীরা বিশেষভাবে উপকৃত হবে এবং তাদের জানার আকাঙ্খা আরো বৃদ্ধি পাবে। তিনি বলেন আইনের শিক্ষার্থীদের চিন্তা-চেতনায় অনেক বেশি স্মার্ট হতে হবে এবং এই স্মার্টনেস কেবল বেশি বেশি বই পড়ার মাধ্যমে অর্জন করা সম্ভব। এই আইনের বিষয়ে তিনি বলেন আমাদের দেশের সাইবার ট্রাইব্যুনাল অন্যান্য দেশের স্পেশালিস্ট কোর্ট এর মত গড়ে তোলা প্রয়োজন যেখানে বিভিন্ন বিষয়ে বিশেষজ্ঞগণ এই বিচার প্রক্রিয়ায় অবদান রাখতে পারেন। সবশেষে তিনি বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় আইন ও মানবাধিকার বিভাগের পক্ষ থেকে সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।