সরকার-অনুমোদিত রাজশাহীর প্রথম বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন স্থায়ী ক্যাম্পাস পরিদর্শন করে আইন ও মানবাধিকার বিভাগের শিক্ষার্থীরা আনন্দ ও উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছে।
বৃহস্পতিবার (৩১ মার্চ) ২০২২, সকাল ১০টায় নগরীর খড়খড়ি বাইপাসে নির্মাণাধীন স্থায়ী ক্যাম্পাস পরিদর্শন করেন আইন ও মানবাধিকার বিভাগের কো-অর্ডিনেটর, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীবৃন্দ। এছাড়া বিভাগের নবাগত শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা যারা প্রথমবারের মতো স্থায়ী ক্যাম্পাস পরিদর্শন করেছেন, তারা বিশেষভাবে আনন্দিত।
বিশাল নির্মাণাধীন ক্যাম্পাস পরিদর্শনে গিয়ে অভিভূত হন আইন ও মানবাধিকার বিভাগের শিক্ষার্থীরা। স্থায়ী ক্যাম্পাসের দ্রুত কাজের অগ্রগতি দেখে তারা অত্যন্ত সন্তুষ্ট। আন্তর্জাতিক মর্যাদার এই ক্যাম্পাসে শিগগিরই একাডেমিক কার্যক্রম শুরু করার বিষয়ে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা অত্যন্ত আশাবাদী এ বিষয়ে বিভাগের প্রথম সেমিস্টারের একজন শিক্ষার্থী বলেন, “আজ প্রথমবারের মতো আমাদের স্থায়ী ক্যাম্পাস দেখতে এসে আমি আমি শুধু এর মন্ত্রমুগ্ধ সৌন্দর্য কল্পনা করছিলাম যে ক্যাম্পাসটি সম্পূর্ণরূপে নির্মিত হলে কতটা বিস্ময়কর হবে। আমি এখানে এসে দেখেছি যে আইন ও মানবাধিকার বিভাগের জন্য একটি উচ্চমানের/ অত্যন্ত-মানসম্মত লাইব্রেরি তৈরি করা হচ্ছে যা আমাদের জন্য পরিশ্রমের সাথে লেখাপড়া করা এবং আইনের সুদক্ষ প্রয়োগ শেখার স্পৃহা তৈরি করেছে। এখন আমরা আগ্রহের সাথে অপেক্ষা করছি এই বিশাল ক্যাম্পাসে ক্লাসে অংশগ্রহণের জন্য।
স্থায়ী ক্যাম্পাসের এই দ্রুত অগ্রগতি অবশ্যই বিশ্ববিদ্যালয়ের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জনের পথ প্রশস্ত করবে; এবং এটি ফ্যাকাল্টি সদস্যদের মূল্যবান সহায়তায় একাডেমিক উচ্চ মান অর্জনের জন্য শিক্ষার্থীদের সহায়তা করবে। আর, বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা কেন্দ্রে প্রাথমিকভাবে কাজ করার সম্ভাবনা অত্যন্ত আকর্ষণীয় বলে জানিয়েছেন শিক্ষকরা। এছাড়াও, শিক্ষার উৎকর্ষ বৃদ্ধি পাবে এবং আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম দেশে বিদেশে ছড়িয়ে পড়বে।
পরিদর্শনকালে, আইন ও মানবাধিকার বিভাগের কো-অর্ডিনেটর, অধ্যাপক আবু নাসের মোহাম্মদ ওয়াহিদ বলেন, “আমরা শিক্ষার্থীদের একাডেমিক উৎকর্ষ এবং সামগ্রিক যোগ্যতার বিকাশে আমাদের অবদান রাখতে অত্যন্ত আশাবাদী। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক মানের উন্নয়ন এবং, দেশে একটি উদাহরণ দিয়ে নেতৃত্ব দিতে চাই যা বর্তমান এবং ভবিষ্যত শিক্ষার্থীদের আমাদের দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন এ অবদান রাখতে অনুপ্রাণিত করবে।”
পরবর্তীতে, রাজশাহীর পুঠিয়ায় ইউরোপীয় ধাঁচের দোতলা রাজপ্রাসাদে; ছাত্ররা; শিক্ষকদের সহায়তায় স্থানটির ঐতিহাসিক বিশালতা অন্বেষণ করতে সক্ষম হয়েছিল এবং প্রাসাদে অতিবাহিত সময় ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই ক্ষেত্রে; ছাত্ররা জানতে পেরেছিল যে: “প্রাসাদটি 1895 সালে রানী হেমন্ত কুমারী তার শাশুড়ি মহারাণী শরৎ সুন্দরী দেবীর স্মরণে নির্মাণ করেছিলেন। প্রাসাদটি প্রাচীন রাজবংশগুলির মধ্যে একটির আবাসস্থল ছিল যারা এক সময় পুঠিয়ায় তাদের মহৎ প্রাসাদ থেকে সমগ্র রাজশাহী জেলা শাসন করতেন। এই রাজবংশটি মুঘল সম্রাট আকবরের শাসনামলে গঠিত হয়েছিল যখন এর প্রতিষ্ঠাতা পীতাম্বরকে স্থানীয় গভর্নর হিসাবে সমগ্র রাজশাহী অঞ্চল শাসন করার জন্য সম্রাট নিযুক্ত করেছিলেন। জনকল্যাণ ও মুঘল সাম্রাজ্যের প্রতি আনুগত্যের নীতির জন্য তাঁর পুত্র নীলাম্বর মুঘল সম্রাট জাহাঙ্গীরের কাছ থেকে রাজার সম্মানসূচক উপাধি পেয়েছিলেন। বর্তমানে প্রাসাদটি পুঠিয়ার এসি ল্যান্ড অফিস হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।”
এরপর নাটোরের লালপুরে অবস্থিত ‘গ্রিনভ্যালি’ পার্কে যাওয়া হয় এবং সেখানে দুপুরের খাবার পরিবেশন করা হয়। এরপর শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, খেলাধুলা ও র্যাফেল ড্র এর আয়োজন করা হয়, এর মধ্য দিয়ে আইন ও মানবাধিকার বিভাগের বার্ষিক বনভোজন এর সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।
পরিশেষে, বার্ষিক বনভোজন সফল সমাপ্তির আলোকে এবং একটি আধুনিক ও আন্তর্জাতিক মানের বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস নির্মাণের মহাপরিকল্পনা দেখে, বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়কে আমাদের দেশে একটি রোল মডেল হিসেবে গড়ে তোলার জন্য সকল শিক্ষার্থী ও শিক্ষক অত্যন্ত উচ্চাকাঙ্ক্ষী।