বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন ও মানবাধিকার বিভাগের কর্তৃক আয়োজিত “How to Study a Legislation and Preparation for Starting a Career: Enrolment as an Advocate” সেমিনার অনুষ্ঠিত

বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন ও মানবাধিকার বিভাগের কর্তৃক আয়োজিত “How to Study a Legislation and Preparation for Starting a Career: Enrolment as an Advocate” সেমিনার অনুষ্ঠিত

শীতের দুপুরকে রাঙিয়ে দিতে বিগত ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ইং তারিখে বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও মানবাধিকার বিভাগকে আলোকিত করতে এসেছিলেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সাবেক বিচারপতি মহোদয় জনাব মোঃ এমদাদুল হক। তিনি এসেছিলেন আইনের জগৎকে ভালোবেসে এবং আইনের শিক্ষার্থীদের বহুমুখী পেশার সম্ভাবনার কথা জানাতে। শুধু তাই নয়, তিনি এসেছিলেন উজ্জীবিত করতে একদল নবীন শিক্ষার্থীদের, যে কিভাবে পেশাজীবনের বিভিন্ন প্রস্তুতি ছাত্রাবস্থাতেই নেয়া যায়; এবং কীভাবে একটি আইনকে অধ্যয়ন করতে হয়, সে বিষয়ে বিস্তর ধারণা দিতে।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন সাবেক বিচারপতি মহোদয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আইন ও মানবাধিকার বিভাগের মাননীয় কো-অর্ডিনেটর প্রফেসর আবু নাসের মোহাম্মাদ ওয়াহিদ স্যার। বিশেষ অতিথি ছিলেন বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়য়ের মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ডঃ এম. ওসমান গনী তালুকদার স্যার। আর বর্ণীল এই অনুষ্ঠানকে রাঙ্গিয়ে রাখেন বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও মানবাধিকার বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীবৃন্দ।     

অনুষ্ঠান সূচনা করেন আইন ও মানবাধিকার বিভাগের প্রভাষক (প্রভিশনাল) সাদিয়া ইসলাম। আর, শুরুতেই অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি মহামান্য সাবেক বিচারপতি মহোদয় এর সংগ্রামী জীবন, ঈর্ষনীয় অর্জন, এবং উল্লেখযোগ্য বিচারিক নিদর্শন নিয়ে অত্যন্ত তথ্যবহুল বক্তৃতা প্রদান করেন আইন ও মানবাধিকার বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রাবিতা রেজয়ানা।   

এরপর, প্রধান অতিথি, মহামান্য সাবেক বিচারপতি মহোদয় তাঁর অমূল্য কিছু বক্তব্য রাখেন। শুরুতেই তিনি আরও একবার মনে করিয়ে দেন আইন শিক্ষার বাস্তব তাৎপর্য। এরপর তিনি বেছে নেন চারজন শিক্ষার্থী এবং প্রদর্শন করেন মানুষ হিসেবে বাস্তব জীবনে আইনের অবিচ্ছেদ্য প্রয়োগ, যেখানে অলিখিত আইনের প্রাধান্যও ফুটে ওঠে। তাঁর বহুমূল্য বক্তৃতার শুরুতেই ফুটে ওঠে একজন আইনের শিক্ষার্থীর কিছু অত্যাবশ্যকীয় বৈশিষ্ট্য- যার অভাবে অঙ্কুরেই ঝরে পড়ে অনেক স্বপ্ন। সেখানে সবথেকে গুরুত্যপূর্ণ বিষয় ছিল কিভাবে আমাদের মুল্যবান সময়কে প্রতিদিন কাজে লাগানো যায় এবং কিভাবে আইনজীবী অথবা বিচারক হবার প্রস্তুতি নিতে হবে। তিনি জোর দেন বাংলাদেশ বার কাউন্সিল এবং জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশন এর সিলেবাস এবং সে অনুযায়ী মূল বই সংগ্রহের জন্যে। এরপর তিনি বলেন কীভাবে আইনের প্রতিটা গুরুত্যপূর্ণ লাইন মার্ক করে করে পরতে হয় এবং সঙ্গে সঙ্গে দেখতে হয় ভাল একটি সহায়ক বই। এর মধ্যে তিনি এটাও মনে করিয়ে দেন যে, উপরোক্ত পরীক্ষাগুলোতে শুধুমাত্র তারাই কৃতকার্য হয় যারা মূল বই পড়ে আইনকে শিখার জন্যে অধ্যয়ন করে, এবং সেই অনুযায়ী নোট প্রস্তুত করে। এরপর তিনি বিস্তর ধারণা দেন কিভাবে একজন শিক্ষার্থী তার নিজের লক্ষে পৌছাতে পারে- বিশেষ করে আইনের শিক্ষার্থীবৃন্দের বিশেষ পেশাগত জীবনে- বিচারক এবং আইনজীবী হবার ক্ষেত্রে। আরেকটি গুরুত্যপূর্ণ বিষয় ছিল যে- প্রতিটি দিনকে লক্ষ্য পূরণের জন্য কাজে লাগানো, তাহলে সবকিছুই সম্ভব হয়ে ওঠে। আর ছিল আইনকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়ে আইনকে শেখার প্রত্যয় নিয়ে অধ্যয়ন গুরুত্ব। পরিশেষে তিনি রুটিন-মাফিক লেখাপড়ার জন্য বিশেষ জোর দেন- যা কিনা যেকোনো সাফল্যের চাবিকাঠি। আর এর মধ্য দিয়েই তিনি তার তথ্যবহুল এবং অনুপ্রেরনাময় বক্তব্যের সমাপ্ত করেন।

অনুষ্ঠানের এ পর্যায়ে বক্তব্য রাখেন বিশেষ অতিথি বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়য়ের মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ডঃ মোঃ ওসমান গনী তালুকদার স্যার। তিনি খুব অপূর্বভাবে তুলে ধরেন শিক্ষার্থীদের জন্য অবশ্য পালনীয় কিছু কর্তব্য- যেগুলো একজন মানুষকে নিয়ে জেতে পারে বহুদুর। তিনি জোর দেন লিখে নোট করে পড়ার পেছনে, কারণ এটি হয় অত্যন্ত দীর্ঘস্থায়ী। তিনি আরও বলেন কিছু বহুমূল্য গানিতিক সমীকরণ- যেগুলো আসলে একজন শিক্ষার্থীর লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্যে অত্যাবশ্যকীয় করনীয় বিষয়সমুহের প্রতিফলন। সবশেষে তিনি উপস্থিত সকল শিক্ষার্থীবৃন্দ এবং আইন ও মানবাধিকার বিভাগের শিক্ষকবৃন্দকে খুব উৎসাহের সাথে আলোকিত মানুষ হবার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবার প্রেরণা প্রদান করে তিনি তার বক্তব্য সমাপ্ত করেন।

সবশেষে, আইন ও মানবাধিকার বিভাগের মাননীয় কো-অর্ডিনেটর প্রফেসর আবু নাসের মোহাম্মাদ ওয়াহিদ স্যার অত্যন্ত প্রাঞ্জল, তথ্যবহুল এবং উৎসাহপূর্ণ বক্তব্য প্রদান করেন। তাঁর সংক্ষিপ্ত এবং কার্যকারী বক্তব্যে ফুটে ওঠে আইন কে ভালবেসে এবং আইন শেখার নিমিত্ত্যে অধ্যয়ন এর তাৎপর্য। সেটার পেছনে দরকার কঠোর পরিশ্রম এবং নোট করে পড়ে নিয়মিত চর্চা- তিনি মনে করিয়ে দেন। তবে, সবথেকে বেশি গুরুত্যপূর্ণ বিষয়টি ছিল আইন কে কাজে লাগিয়ে, দেশ ও মানুষের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করা এবং সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ানো- যেটা উপস্থিত সকলকে দারুনভাবে উজ্জীবিত করে। তিনি আরও বলেন, এতে করে শিক্ষার্থীরা সফলতা পাবেই, এবং হতে পারবে বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়য়ের একেকটি উজ্জ্বল নক্ষত্র, নিয়ে যেতে পারবে আইন ও মানবাধিকার বিভাগকে দেশের প্রথম সারির আইন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে।

এর মধ্য দিয়েই সমাপ্ত হয় বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও মানবাধিকার বিভাগ কর্তৃক আয়োজিত এই সেমিনার।