রাজশাহীর প্রথম ও স্বনামধন্য বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও মানবাধিকার বিভাগের শেষ বর্ষের ১০ম ও ১১শ সেমিস্টারের শিক্ষার্থীদের নিয়ে তাদের কোর্স কারিকুলামের অন্তর্ভুক্ত "কোর্ট ভিজিট" অনুষ্ঠিত হয় গত ২০শে ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ইং তারিখে। আইনের শিক্ষার্থীদের জন্য এই কোর্ট ভিজিট অতীব গুরুত্বপূর্ন যা তাদের মূল কোর্স তথা Professional Ethics & Trial Advocacy তে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। মূলত, এই সেশনটির অভিজ্ঞতা কেবল মক-ট্রায়ালেই নয়, বরং তাদের ভবিষ্যৎ জীবনে আইনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট যেকোনো পেশাতেই তাদের এই ব্যাবহারিক জ্ঞানটি সহায়ক হিসেবে ভূমিকা পালন করবে। বিভাগের কো-অর্ডিনেটর আবু নাসের মোঃ ওয়াহিদ স্যার এর দিকনির্দেশনায়, সংশ্লিষ্ট কোর্সের কোর্স টিচার মিস সাদিয়া হোসেনের নেতৃত্বে তাদের নিয়ে যাওয়া হয় জেলা ও দায়রা জজ আদালত, রাজশাহীতে।
আদালতে গিয়ে তাদের প্রথমেই সাইবার ট্রাইবুনাল, রাজশাহীর সম্মানিত বিচারক মোঃ জিয়াউর রহমান স্যারের এজলাসে পূর্বানুমতিক্রমে তাদেরকে সময়মতো প্রবেশ করানো হয়। সেদিন তারা প্রথম একটি বাস্তব কোর্ট রুমের সাথে পরিচিত হয়। সাইবার আদালতে সেদিনকার কজলিস্টের বিভিন্ন মামলার মোট ১০টি সাক্ষীর জেরা শুনানী তারা প্রত্যক্ষ করে, যা বাস্তবিকভাবেই একটি জেরার কলাকৌশল সঠিকভাবে রপ্ত করতে সহায়ক এবং মামলার খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি পর্যায় হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এরপর সাক্ষী শুনানী শেষে সাইবার আদালতের সম্মানিত বিচারক নিজেই সকল শিক্ষার্থীদের সাথে সরাসরি আলোচনায় বসেন। তাদের অভিজ্ঞতা ও অভিমত জানতে চান এবং মামলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলাপ আলোচনা করেন৷ এরই সঙ্গে সেখানে উপস্থিত সম্মানিত অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) এর সঙ্গেও তাদের সাক্ষাৎ হয় যিনি তাদেরকে ভবিষ্যতে ভালো আইনজীবী হবার জন্য বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ প্রদান করেন। এরপর শিক্ষার্থীদের কোর্ট লাইব্রেরিতে নিয়ে যাওয়া হয় যাতে করে তারা পরবর্তীতে তাদের রিসার্চ বা অন্যান্য পড়াশোনার উদ্দেশ্যে আইনের যাবতীয় রিপোর্টেড কেস সেখানে গিয়ে সংগ্রহ করার প্রবেশাধিকার পায়। এরপর তাদেরকে কোর্ট প্রাঙ্গন ঘুরিয়ে দেখাতে দেখাতে তাদের চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট পরিদর্শন করানো হয়। তারই সাথে লিগ্যাল এইড সেক্টর সম্পর্কে তাদের অবগত করানো হয়। আমলী আদালত হিসেবে ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের ভূমিকা তাদের জানানো হয়। এরপর দায়রা আদালত সম্পর্কে তাদেরকে অবগত করানো হয় যেখানে একটি ফৌজদারী মামলা রেডি ফর ট্রায়াল হবার পর স্থানান্তরিত হয়ে মূল বিচারিক কার্যক্রম শুরু করা হয়। কিছু কিছু মামলা যেগুলোর বিচার ও শাস্তি প্রদানের ক্ষমতা ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টকে ফৌজদারী কার্যবিধির ১৮৯৮ এর ধারা ৩২ এবং বিশেষাধিকার হিসেবে ধারা ২৯(গ) ও ৩৩(ক) তে দিয়ে দেওয়া হয়েছে সেই বিচার শুনানী এজলাসে কিভাবে করা হয় সেই ট্রায়াল প্রসিডিওর সম্পর্কে তাদেরকে অবগত করানো হয়। আইনজীবীদের কোর্ট চেম্বার সচক্ষে অবলোকন করানো হয় তাদের।
হাজার হাজার বিচারপ্রার্থীর ভীড়ে ফরমাল পোশাকে তথা কালো কোর্ট পরিহিত অবস্থায় তারা নিজেরাও যেন ভবিষ্যৎ জীবনে নিজেদেরকে আইন অঙ্গনের যোগ্য প্রতিনিধি হিসেবে তাদেরকে প্রতিকার দেবার স্বপ্ন চোখে বুনেছিলো সেদিন। এই কোর্ট ভিজিটের সার্থকতা এখানেই!