বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষ্যে বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্নালিজম বিভাগে আলোচনা সভা

বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষ্যে বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্নালিজম বিভাগে আলোচনা সভা

বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় জার্নালিজম ক্লাবের উদ্যোগে বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা ও কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে। রবিবার (৪ মে) বিকেল ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্নালিজম, কমিউনিকেশন অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা এই আয়োজনে অংশগ্রহণ করেন।

এবারের বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবসের প্রতিপাদ্য ছিলো 'সাহসী নতুন বিশ্বে রিপোর্টিং- সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং গণমাধ্যমের উপর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রভাব'

আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন বিভাগের কোঅর্ডিনেটর মো. শাতিল সিরাজ। এতে বক্তব্য রাখেন বিভাগের শিক্ষক মো. সাজ্জাদ হোসেন, মুহাম্মদ রাকিব হোসাইন, তন্দ্রা মণ্ডল, আয়শা সিদ্দীকা ও ফাতেমা-তুজ-জোহরা। এছাড়া বিভাগের শিক্ষার্থীরাও বক্তব্য উপস্থাপন করেন।

সভায় বক্তারা স্বাধীন ও নিরপেক্ষ গণমাধ্যমের গুরুত্ব তুলে ধরেন। তারা বলেন, আজকের বিশ্বে তথ্যনিয়ন্ত্রণ, রাজনৈতিক চাপ, সেন্সরশিপ ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার নেতিবাচক ব্যবহারের কারণে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে।

কো-অর্ডিনেটর মো. শাতিল সিরাজ বলেন, গণমাধ্যম সমাজের দর্পণ, গণতন্ত্র ও সুশাসন নিশ্চিত করতে স্বাধীন গণমাধ্যমের কোন বিকল্প নেই। একই সাথে তিনি বাক স্বাধীনতা, ব্যক্তিগত পর্যায়ে অন্যের মতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া এবং গ্রহণ করার উপর গুরুত্বারোপ করেন।

মো. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, গণমাধ্যম ও সাংবাদিকতা বর্তমানে এক বিপুল প্রযুক্তিগত রূপান্তরের মধ্য দিয়ে অগ্রসর হচ্ছে, যার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই। খবর সংগ্রহ, বিশ্লেষণ, উপস্থাপন এবং পাঠকের সঙ্গে সংযুক্ত হওয়ার পদ্ধতিগুলোতে এআই এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে। তবে এই প্রযুক্তির প্রয়োগ যেমন বহু সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করছে, তেমনি কিছু গুরুতর নৈতিক, সামাজিক ও পেশাগত চ্যালেঞ্জও সৃষ্টি করছে।

মুহাম্মদ রাকিব হোসাইন গণমাধ্যম ও সাংবাদিকতার স্বাধীনতার উপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করে বলেন তোমরাই পারবে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে কাজ করতে এবং মানবিক সাংবাদিকতা নিশ্চিত করতে।

তন্দ্রা মণ্ডল বলেন, আমাদের উচিত, প্রযুক্তিকে নিয়ন্ত্রণ করে নয়, নীতিমালার আওতায় রেখে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা। তিনি সাংবাদিকতায় সাহস ও নির্ভিকতার উপর জোর দেন।

আয়শা সিদ্দীকা বলেন, প্রযুক্তি একদিকে সুযোগ, অন্যদিকে চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে তবে প্রযুক্তি কখনো মানুষের বিকল্প হবে না। তিনি প্রযুক্তিকে সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ইতিবাচক ভাবে ব্যবহারের প্রাসঙ্গিকতা তুলে ধরেন।

ফাতেমা-তুজ-জোহরা বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার গুরুত্ব তুলে ধরেন। তিনি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহারের নৈতিক দিকগুলো তার আলোচনায় তুলে ধরে বলেন, এআই ব্যবহারে নৈতিক দিকগুলো বিবেচনায় না নিলে সাংবাদিকতার মৌলিক নীতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

আলোচনা সভা শেষে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে কুইজ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন ক্লাবের সভাপতি ও বিভাগের কো-অর্ডিনেটর মো. শাতিল সিরাজ। শিক্ষার্থীরা বলেন, এ আয়োজন তাদের গণমাধ্যমের স্বাধীনতা বিষয়ে ভাবতে এবং সচেতন হতে উদ্বুদ্ধ করবে।