বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের আয়োজনে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদযাপিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) জিলিয়া ভবন চত্বরে বিভাগটির পক্ষে মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। এসময় শিক্ষার্থীরা ফেস্টুন, ব্যানার হাতে নারীর প্রতি বৈষম্য পরিহার করার জন্য আহবান জানান।
ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের ১ম সেমিস্টারের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘মার্চ মাসের ৮ তারিখ আন্তর্জাতিক নারী দিবস। বিশ্বজুড়ে এইদিন মেয়েদের সম্মান জানানো হয়। তবে নারীদের সম্মান জানানোর জন্য আলাদা দিনের প্রয়োজন নাই । কারণ তাঁরা স্বয়ংসিদ্ধা। তাঁরা এখন কারও উপরে নির্ভরশীল নয়। উল্টে তাঁদের উপরই দাঁড়িয়ে আছে পরিবার। আবার কখনও তাঁদের উপরেই নির্ভর করছে কোনও দেশের ভাগ্য বা কোম্পানির ভবিষ্যৎ। তাই বিশ্ব জুড়ে নারীদের সম্মান জানাচ্ছি।
একই সেমিস্টারের শিক্ষার্থী আফিফা মুস্তারী নারী দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, ‘আজ পৃথিবী জেগে উঠেছে নারী দিবস হিসেবে। কিন্তু সবাই কি জানে আমরা কতটা পথ পেরিয়ে এসেছি? নারী দেখেছে সেই সময়, যে সময় কন্যা সন্তানের পরিচয় দিতে পিতা লজ্জাবোধ করতো। নারী দেখেছে সেই সময়, যে সময় স্বামীর অপ-মৃত্যুতে জ্বলতে হতো স্বামীর জ্বলন্ত চিতায়। তবে অনন্দের বিষয়, এখন সময় বদলেছে, নির্যাতনের ধারাও বদলেছে, তবে নির্মূল হয় নি। ফিরে এসেছে নতুন রূপে। কখনো সাইবার বুলিং বা কখনো বিজ্ঞাপনে পণ্য হিসেবে। তবে এই দায়-ভার হতো তথাকথিত এই সভ্য সমাজের। সভ্যতার ক্রম বিকাশের সাথে যদি মানুষের মানসিকতার পরিবর্তন হতো তাহলে হয়ত ঘটা করে নারী অধিকার চাইতে হতো না।’
বিভাগের প্রধান ড. কানিজ হাবিবা আফরিন মানববন্ধনে যোগ দিয়ে বলেন, মানবিক ও উন্নত সমাজ বিনির্মাণে সমাজে নারীদের সমমর্যাদা ও সমঅধিকার নিশ্চিত করতে হবে। লিঙ্গ বৈষম্য ও স্টোরিও টাইপ ধারণাগুলো পরিহার করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘নারীদের সমমর্যাদা নিশ্চিত করা এখনো সম্পূর্ন রুপে সম্ভব হয়নি, যা বিশ্বসভ্যতার একটি বড় সংকট।
এই সংকট থেকে বেরিয়ে আসার ক্ষেত্রে নারী ও পুরুষের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন জরুরি। কর্মক্ষেত্রে সুযোগ বৃদ্ধি, সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ এবং ডিজিটাল প্লাটফর্মসহ সব ক্ষেত্রে নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার মাধ্যমে নারী সমাজের অগ্রগতির ধারা অব্যাহত রাখতে হবে।’ এক্ষেত্রে সমন্বিতভাবে কাজ করার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানান তিনি। এই মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশ নেন বিভাগের প্রধানসহ অন্যান্য শিক্ষক-শিক্ষার্থীবৃন্দ।
উল্লেখ্য, ডিজিটাল প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন, জেন্ডার বৈষম্য করবে নিরসন’ এই প্রতিপাদ্য নিয়ে বিশ্বের অন্যান্য দেশের সাথে বাংলাদেশেও উদযাপিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক নারী দিবস।